প্রকাশের তারিখ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শারদীয় পূজার ছুটিতে রেকর্ড পর্যটক বরণে প্রস্তুত কুয়াকাটা
শারদীয় দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিকে ঘিরে পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র কুয়াকাটায় নেমেছে উৎসবের আমেজ। আগত পর্যটকদের ঢল সামলাতে প্রস্তুত রয়েছে সমুদ্রপাড়ের হোটেল-মোটেল থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট, ফিশ ফ্রাই মার্কেট সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কুয়াকাটার প্রথম শ্রেণির প্রায় সব হোটেল-মোটেল শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। এছাড়া ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০-৬০ শতাংশ এবং ৪-৬ অক্টোবর পর্যন্তও প্রায় অর্ধেক রুম আগাম বুক হয়ে গেছে।শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কুয়াকাটার বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রায় দুই শতাধিক প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেলের রুম পুরোপুরি বুকড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতেও ৬০-৮০ শতাংশ বুকিং সম্পন্ন হয়েছে।দুপুর ১১টা ৫২ মিনিটে হালকা বৃষ্টিতে কিছু সময় সৈকতে ভিড় কমলেও বৃষ্টি থামতেই আবার ভরে যায় পর্যটকে। সন্ধ্যা নামতেই প্রতিদিন জমজমাট হয়ে ওঠে ফিশ ফ্রাই মার্কেট, সমুদ্র থেকে সদ্য ধরা তাজা মাছ দিয়ে তৈরি এই খাস্তা ও মশলাদার ফিশ ফ্রাইয়ের স্বাদ নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত পর্যটক। সন্ধ্যা নামতেই জমে ওঠে ফিশ ফ্রাই মার্কেট, যা এখন কুয়াকাটা ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ।কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফরাজী বলেন, “দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির দীর্ঘ ছুটিকে কেন্দ্র করে প্রথম শ্রেণির হোটেলের প্রায় শতভাগ রুম বুকিং হয়ে গেছে। ছোট-বড় হোটেলেও প্রায় ৭০ শতাংশ বুকড। তিনি আরো বলেন,“১ থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের রিসোর্ট শতভাগ বুকড। এছাড়া ২৮-৩০ সেপ্টেম্বর ও ৪-৬ অক্টোবর পর্যন্তও ৫০-৬০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। প্রতিদিনই নতুন বুকিংয়ের ফোন পাচ্ছি, এ লম্বা ছুটি কুয়াকাটায় বড় পরিবর্তন আনবে বলে আমরা আশা করছি।”আগত পর্যটকদের বরণে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ফিশ ফ্রাই, আচার, ঝিনুক ও বার্মিজ দোকানসহ প্রায় ১৬টি পেশার প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক প্রস্তুত আছেন।দেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়, সেই কুয়াকাটা সাধারণত অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রধান পর্যটন মৌসুমে মুখর থাকে। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর সারা বছরই পর্যটকের উপস্থিতি বেড়েছে। এবারের পূজার ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।কুয়াকাটা সৈকতকে ঘিরে গড়ে ওঠা রাখাইন মার্কেট, শুঁটকি মার্কেট, ঝিনুক-আচার ব্যবসা, চটপটি দোকান, রাখাইন পল্লী, মিশ্রিপাড়া, ইলিশ পার্ক, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বনসহ সব পর্যটন স্পটের ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “লম্বা ছুটিতে পর্যটকের চাপ মোকাবিলায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের সম্মিলিতভাবে বাড়তি নিরাপত্তা ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।” কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা, পূজার এই লম্বা ছুটি হবে নতুন মৌসুমের সফল সূচনা এবং রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক উপভোগ করবেন সাগরকন্যার শহর কুয়াকাটার সৌন্দর্য।
কপিরাইট © ২০২৫ চ্যানেল এ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত