কালিহাতীর খেতে সোনালি স্বপ্নের জোয়ার, রোপা আমনে বাম্পার ফলন
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় এ বছর রোপা আমন ধানের মাঠ যেন সোনালি স্বপ্নে ভরে উঠেছে। কৃষকের পরিশ্রম, প্রকৃতির অনুকূল আবহাওয়া, আধুনিক কৃষিপরামর্শ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এবার উপজেলাজুড়ে দেখা গেছে বাম্পার ফলনের উৎসবমুখর দৃশ্য। স্বস্তি ফিরেছে কৃষকের ঘরে, মুখে ফুটেছে আশার হাসি।উপজেলার বাংড়া, বল্লা, নারান্দিয়া, পারখী, এলেঙ্গা, বানিয়াফৈর ও গোহালিয়াবাড়ীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে এখন চোখে পড়ে সোনালি ধানের ঢেউ। ভোর থেকেই মাঠে দেখা যায় ব্যস্ত কৃষকের পদচারণা ধান কাটা, বহন, মাড়াই আর শুকানোর কাজে চারদিকে জমে উঠেছে এক গ্রামীণ উৎসবের পরিবেশ। সোনালি ধানের আঁটি হাতে কৃষকের চোখে-মুখে ঝরে পড়ছে তৃপ্তি।কালিহাতী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা মামুন জানান, চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮,০৪০ হেক্টর, কিন্তু অর্জন হয়েছে ৮,৪৬৫ হেক্টর। তিনি বলেন, এ বছর আবহাওয়া ছিল পুরোপুরি অনুকূলে। কৃষকেরা সঠিক কৃষিপরামর্শ অনুসরণ করায় উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বর্তমানে ধান কর্তনের কাজ চলমান আছে।স্থানীয় কৃষক রনজিত বাবু বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। কীটপতঙ্গও ছিল কম, আর বৃষ্টি রোদ সবই পেয়েছি সময়মতো। এখন যদি ন্যায্যমূল্য পাই, তবে কষ্ট পুরোপুরি সার্থক হবে।সিলিমপুর গ্রামের কৃষক সুরুজ জানান, দুই একর জমিতে ধান করেছি। ফলন হয়েছে আশার চেয়েও ভালো। কিছু জায়গায় অতিবৃষ্টিতে ধান হেলেও তেমন ক্ষতি হয়নি। সব মিলিয়ে বলা যায়, এবার সত্যিই বাম্পার ফলন।তবে খুশির সাথে কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও শোনালেন কৃষকেরা। শ্রমিক সংকট, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং আধুনিক কৃষিযন্ত্রের অভাবে খরচ বেড়ে গেছে। ধান কাটতে সময় বেশি লাগায় তারা সরকারি সহায়তায় স্বল্পমূল্যে কৃষিযন্ত্র সরবরাহ ও বাজারে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের দাবি জানান।মাঠের পর মাঠজুড়ে দোল খাওয়া সোনালি ধান শুধু ফলনের আনন্দ নয় এটি কালিহাতীর কৃষকের পরিশ্রম, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার এক প্রাণময় জয়গান।