
দিনাজপুরের আত্রাই নদীর জয়ন্তীয়া ঘাটে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে জনগুরুত্বপূর্ণ জয়ন্তীয়া সেতু নির্মাণ কাজ। দুই মেয়াদে সময় বাড়িয়েও ছয় বছরে সম্পন্ন হয়েছে কাজের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পালিয়ে যাওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেতুর ভবিষ্যৎ, ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার প্রায় দশ লাখ মানুষ।
২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ‘গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় আত্রাই নদীর ওপর ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ কাজের ব্যয় ধরা হয় ৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঢাকাস্থ মেসার্স সুরমা কনস্ট্রাকশন, তত্ত্বাবধানে ছিল এলজিইডি দিনাজপুর অফিস।
চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় সময় বাড়িয়েও সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৩টি স্প্যানের কাজ। মোট ৯ স্প্যানের মধ্যে ৬টি এখনো বাকি। ঠিকাদার কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও এলজিইডির উদাসীনতার কারণেই সেতুর কাজ বছরের পর বছর আটকে আছে। ফলে দুই উপজেলার পাশাপাশি নীলফামারী জেলার মানুষও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয়রা কাঠ ও বাঁশের তৈরি সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল, আর বর্ষাকালে একমাত্র ভরসা স্যালোচালিত নৌকা। পারাপারে দিতে হয় টোল, ঝুঁকির মধ্যেই প্রতিদিন চলাচল করতে হয় মানুষকে। এতে কৃষি, বাণিজ্য ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
৫ অক্টোবর সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর পিলারগুলো নদীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে, তবে নির্মাণ সামগ্রী ও কর্মচারীদের দেখা মেলেনি। স্থানীয়রা জানান, এক সময় এখানে একজন ম্যানেজার ও পাহারাদার থাকলেও তারা এখন আর নেই।
অফিস সূত্রে জানা যায়, মোট বরাদ্দ ৪৪ কোটি টাকার মধ্যে ইতোমধ্যে ২২ কোটি টাকা ঠিকাদার তুলে নিয়েছে।
পাল্টাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তৌহিদুল ইসলাম ও খামারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, সেতুটি না থাকায় দুই উপজেলার মানুষকে ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে।
স্থানীয় ভ্যানচালক আবু বকর সিদ্দিক জানান, সেতুটি হলে আমাদের যাত্রা ও আয়ের পথ খুলে যাবে। এখন দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় যাত্রী পাওয়ার জন্য।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী তোতা মিয়া ও সাব্বির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেতুর অভাবে কৃষিপণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। দ্রুত সেতুর কাজ শেষ না হলে এই অঞ্চলের কৃষকরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সুরমা কনস্ট্রাকশন এর স্বত্বাধিকারী আইয়ুব আলী ফোন ধরেননি। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফজলুল হক জানান, আমরা কাজ ছেড়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে এলজিইডি দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান ও বীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, বর্তমান ঠিকাদারকে বাতিল করে নতুনভাবে পুনঃটেন্ডার আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যেই পুনরায় কাজ শুরু হতে পারে বলে আমরা আশাবাদী।
মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫
দিনাজপুরের আত্রাই নদীর জয়ন্তীয়া ঘাটে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে জনগুরুত্বপূর্ণ জয়ন্তীয়া সেতু নির্মাণ কাজ। দুই মেয়াদে সময় বাড়িয়েও ছয় বছরে সম্পন্ন হয়েছে কাজের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পালিয়ে যাওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেতুর ভবিষ্যৎ, ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার প্রায় দশ লাখ মানুষ।
২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ‘গ্রামীণ সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় আত্রাই নদীর ওপর ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের গার্ডার সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ কাজের ব্যয় ধরা হয় ৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। নির্মাণের দায়িত্ব পায় ঢাকাস্থ মেসার্স সুরমা কনস্ট্রাকশন, তত্ত্বাবধানে ছিল এলজিইডি দিনাজপুর অফিস।
চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দুই দফায় সময় বাড়িয়েও সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৩টি স্প্যানের কাজ। মোট ৯ স্প্যানের মধ্যে ৬টি এখনো বাকি। ঠিকাদার কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও এলজিইডির উদাসীনতার কারণেই সেতুর কাজ বছরের পর বছর আটকে আছে। ফলে দুই উপজেলার পাশাপাশি নীলফামারী জেলার মানুষও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয়রা কাঠ ও বাঁশের তৈরি সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল, আর বর্ষাকালে একমাত্র ভরসা স্যালোচালিত নৌকা। পারাপারে দিতে হয় টোল, ঝুঁকির মধ্যেই প্রতিদিন চলাচল করতে হয় মানুষকে। এতে কৃষি, বাণিজ্য ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
৫ অক্টোবর সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর পিলারগুলো নদীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে, তবে নির্মাণ সামগ্রী ও কর্মচারীদের দেখা মেলেনি। স্থানীয়রা জানান, এক সময় এখানে একজন ম্যানেজার ও পাহারাদার থাকলেও তারা এখন আর নেই।
অফিস সূত্রে জানা যায়, মোট বরাদ্দ ৪৪ কোটি টাকার মধ্যে ইতোমধ্যে ২২ কোটি টাকা ঠিকাদার তুলে নিয়েছে।
পাল্টাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তৌহিদুল ইসলাম ও খামারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, সেতুটি না থাকায় দুই উপজেলার মানুষকে ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে।
স্থানীয় ভ্যানচালক আবু বকর সিদ্দিক জানান, সেতুটি হলে আমাদের যাত্রা ও আয়ের পথ খুলে যাবে। এখন দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় যাত্রী পাওয়ার জন্য।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী তোতা মিয়া ও সাব্বির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেতুর অভাবে কৃষিপণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। দ্রুত সেতুর কাজ শেষ না হলে এই অঞ্চলের কৃষকরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সুরমা কনস্ট্রাকশন এর স্বত্বাধিকারী আইয়ুব আলী ফোন ধরেননি। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফজলুল হক জানান, আমরা কাজ ছেড়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে এলজিইডি দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান ও বীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, বর্তমান ঠিকাদারকে বাতিল করে নতুনভাবে পুনঃটেন্ডার আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যেই পুনরায় কাজ শুরু হতে পারে বলে আমরা আশাবাদী।
মোবাইল নাম্বারঃ +8801602460060
Email: hr.channela@gmail.com
বিজ্ঞাপনঃ +8801602460060
info@channelabd.com
আপনার মতামত লিখুন