মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
চ্যানেল এ

সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে যমুনার ভাঙনে ২৫টি পরিবার নিঃস্ব, হুমকির মুখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান



সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে যমুনার ভাঙনে ২৫টি পরিবার নিঃস্ব, হুমকির মুখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে যমুনার ভাঙনে ২৫টি পরিবার নিঃস্ব,


সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে আবারও ভয়াবহ আকারে শুরু হয়েছে যমুনার ভাঙন। গত (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে প্রায় ২৫টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভিটেমাটি, গবাদিপশু, আসবাবপত্র ও টিনের চালসহ সর্বস্ব হারিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।


স্থানীয়রা জানান, বিকেল গড়িয়ে আসতেই চাঁদপুর চরে যমুনার স্রোত হঠাৎ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে লালচাঁন, জুড়ান, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল, ডা. এরশাদসহ অন্তত ৭-৮ পরিবারের বসতভিটা নদীতে তলিয়ে যায়।


৭৩ বছর বয়সী আতাহার মন্ডল চোখের জলে ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন,

“আমার জীবনে বহুবার ভাঙন দেখেছি, কিন্তু এত ভয়াবহ কোনোদিন দেখিনি। চোখের সামনে ভিটেমাটি নদীতে চলে যেতে দেখলে বুকটা ফেটে যায়। এখন আমরা কোথায় আশ্রয় নেব?”


সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে তাদের স্কুল ভবন মাত্র ৫৫ মিটার দূরে। আশপাশের অন্তত পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও হুমকির মুখে।

তিনি সতর্ক করে বলেন,

“জিও ব্যাগ না ফেলা হলে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাবে।”


সমাজকর্মী হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন ও আব্দুল মমিন জানান, এক নজরে কয়েকশ মিটার জমি যমুনায় চলে গেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে এবং অন্তত ১২টি এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

তাদের দাবি— অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য পুনর্বাসন ও সহায়তা নিশ্চিত করা হোক।


শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,

“আমাদের বাড়িঘর, স্কুল, মসজিদ সবকিছু নদীতে চলে যাচ্ছে। আমরা দিন রাত আতঙ্কে আছি।”


ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ। তিনি জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে।

“ভাঙন রোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।


স্থানীয়দের মতে, শুধু বসতভিটাই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারের কাছে জরুরি ত্রাণ, পুনর্বাসন এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন

চ্যানেল এ

মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫


সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে যমুনার ভাঙনে ২৫টি পরিবার নিঃস্ব, হুমকির মুখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

প্রকাশের তারিখ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

featured Image


সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে আবারও ভয়াবহ আকারে শুরু হয়েছে যমুনার ভাঙন। গত (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে প্রায় ২৫টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভিটেমাটি, গবাদিপশু, আসবাবপত্র ও টিনের চালসহ সর্বস্ব হারিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।


স্থানীয়রা জানান, বিকেল গড়িয়ে আসতেই চাঁদপুর চরে যমুনার স্রোত হঠাৎ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে লালচাঁন, জুড়ান, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল, ডা. এরশাদসহ অন্তত ৭-৮ পরিবারের বসতভিটা নদীতে তলিয়ে যায়।


৭৩ বছর বয়সী আতাহার মন্ডল চোখের জলে ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন,

“আমার জীবনে বহুবার ভাঙন দেখেছি, কিন্তু এত ভয়াবহ কোনোদিন দেখিনি। চোখের সামনে ভিটেমাটি নদীতে চলে যেতে দেখলে বুকটা ফেটে যায়। এখন আমরা কোথায় আশ্রয় নেব?”


সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে তাদের স্কুল ভবন মাত্র ৫৫ মিটার দূরে। আশপাশের অন্তত পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও হুমকির মুখে।

তিনি সতর্ক করে বলেন,

“জিও ব্যাগ না ফেলা হলে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাবে।”


সমাজকর্মী হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন ও আব্দুল মমিন জানান, এক নজরে কয়েকশ মিটার জমি যমুনায় চলে গেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে এবং অন্তত ১২টি এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

তাদের দাবি— অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য পুনর্বাসন ও সহায়তা নিশ্চিত করা হোক।


শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,

“আমাদের বাড়িঘর, স্কুল, মসজিদ সবকিছু নদীতে চলে যাচ্ছে। আমরা দিন রাত আতঙ্কে আছি।”


ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ। তিনি জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে।

“ভাঙন রোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।


স্থানীয়দের মতে, শুধু বসতভিটাই নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সরকারের কাছে জরুরি ত্রাণ, পুনর্বাসন এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।


চ্যানেল এ

মোবাইল নাম্বারঃ +8801602460060

Email: hr.channela@gmail.com
বিজ্ঞাপনঃ +8801602460060
info@channelabd.com


কপিরাইট © ২০২৫ চ্যানেল এ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত